প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একটি মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া একদিনে ১০ লাখ গাছের চারা লাগিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে সরকার।
বুধবার দুপুরে এভারেস্টজয়ী চার বাংলাদেশি মুসা ইব্রাহীম, এমএ মুহিত, নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীনকে সংবর্ধনা দানকালে এ আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এভারেস্টজয়ী চার জনের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন তিনি।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় দেশের পতাকা ওড়ানো চার পর্বতারোহীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক অর্জন। আমরা বাঙালি হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারছি। একটি স্বাধীন দেশ ও পতাকা পেয়েছি। এর সবই এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা আত্মপরিচয়ের সুযোগ পাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যত প্রজন্ম বাংলাদেশের পতাকা আরো উঁচুতে নিয়ে যাবে। নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীনের এভারেস্ট জয়ের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি অর্জনে নারীদের অংশগ্রহণ আছে। নারী-পুরুষ সমানে সমান। ছেলে-মেয়ে কেউ পিছিয়ে নেই।’
এভারেস্টে বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশি মুসা ইব্রাহীম নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘৬৭তম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এভারেস্ট জয় করেছে। এই পথ ধরে আরো অনেকে এগিয়ে আসবেন।’
বাংলাদেশে একটি মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং একদিনে ১০ লাখ গাছের চারা লাগিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান মুসা ইব্রাহীম।
পর্বতারোহনবিষয়ক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে প্রতি পহেলা আষাঢ় বৃক্ষরোপণ করি। একদিনে ১০ লাখ গাছ লাগানো কঠিন বিষয় না। আমরা পারবো।’
দুবার এভারেস্ট ঘুরে আসা এম এ মুহিত এভারেস্ট শৃঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে তার একটি আলোকচিত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসাবে এভারেস্ট জয় করে আসা নিশাত মজুমদারও তার অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন।
এভারেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন তার বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা নারীরা এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক ঝুঁকির মধ্যে এভারেস্ট থেকে ফিরে এসে প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছে আমার পুনর্জন্ম হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার।
সরকারের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সাংসদ এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গেয়ে শোনান জনপ্রিয় শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও এস আই টুটুল।
গত ১৯ মে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠেন নিশাত মজুমদার। তার সঙ্গী ছিলেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত। এর ঠিক এক সপ্তাহ পর ২৬ মে সেখানে পা রাখেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। ২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহিম। এরপর ২০১১ সালের ২১ মে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন এমএ মুহিত।