আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, করমচা, জামরুলসহ বিভিন্ন ফল গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে দেহ-মনে বইয়ে দেয় শীতল পরশ। এগুলো কেবল সুস্বাদু ফলই নয়, বাঙালি সংস্কৃতিরও শক্তিশালী অনুষঙ্গ।
বাঙালির এ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চাকে সমুন্নত রাখতে প্রতিবারের মতো এবারো এসব ফল নিয়ে ফল উৎসবের আয়োজন করে সংস্কৃতিক সংগঠন দৃষ্টি।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় দৃষ্টির ১৯তম এ ফল উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নানক বলেন, ‘আমাদের সমাজের মানুষখেকো ফল ব্যবসায়ী সর্ম্পকে জনগণকে সচেতন করতে হবে। কারণ, তারা ফলমূলের সঙ্গে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মেশান।’
নানক বলেন, ‘আমাদের সমাজের দেশপ্রেমিক মানুষদের খুঁজে বের করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। কারণ, নতুন প্রজন্মকে আসল ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে। তরুণ প্রজন্ম আজ ফাস্টফুডের দোকানে যায়। তারা দেশীয় ফলমূল চেনে না।’
তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এ ধরনের অনুষ্ঠান তরুণদের আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি সর্ম্পকে সচেতন করবে।
উৎসবে ঢাবির উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আজকের এ ফল উৎসব তরুণদের জন্য। তরুণরা এই শহরে বাস করে ফলমূল সর্ম্পকে ভুলে যাচ্ছে। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় ফলমূল সর্ম্পকে সচেতন করতে হবে।’
দৃষ্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মালেক, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাভোকেট মোল্লা মা. আবু কাওসার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী ফকির আলমগীর, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজল হোসেন, শিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস।
দৃষ্টি আয়োজিত ফল উৎসবে ৪০ ধরনের দেশীয় ফল প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষে দৃষ্টি শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে।
প্রদর্শিত ফলগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, পেয়ারা, লটকন, কলা, আতা, সরিফা, মাখনা, আমলকি, বড়ই, করমচা, কাউফল, জামরুল, ডেউয়া, নারকেল, ডাব, তাল,বাঙ্গি, গাব, বিলেতি গাব, বেত ফল, কামরাঙ্গা, আমড়া, আনারস ইত্যাদি।