1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ অপরাহ্ন

রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্যে খুন করে তারা!

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২১ Time View

রাজধানীর বনানীতে চীনা নাগরিক গাওজিয়ান হুইকে (৪৭) শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ বাড়ির পেছনে পুঁতে রাখা হয়। তদন্ত এগোচ্ছিল ব্যাবসায়িক বিরোধ এবং ব্যবসার টাকা আত্মসাতের সন্দেহের দিকে। শেষ পর্যন্ত জানা গেল, এসব নয়, বাড়িটির দুই নিরাপত্তাকর্মীই নগদ টাকা আত্মসাতের লোভে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। অথচ ঘটনার পর বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা পালিয়ে যাননি। হত্যাকাণ্ডের পর নিরাপত্তাকর্মীরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নির্বিকার জবাব দিয়েছিল। ধনীদের জীবনযাপন দেখে তারা নিজেদের অবস্থার তুলনা করে হতাশায় ভুগছিলেন। সেই হতাশা থেকেই এই হত্যাকাণ্ড।

তদন্তকারীরা বলেন, বিত্তবানদের জীবনযাপন দেখে হতাশা থেকে দুজন রাতারাতি ধনী হওয়ার মতো কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুজনই ওই ভবনের ছাদে থাকত। একসঙ্গে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একজনের বাড়ি নড়াইলে এবং অন্যজনের বাড়ি ঝিনাইদহে। তারা সম্প্রতি একাকী থাকা গাওজিয়ান হুইকে হত্যা করে তাঁর বাসা থেকে টাকা লুট করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রউফ ও এনামুল।

অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর একবার তারা গাওজিয়ানকে হত্যার জন্য গেলেও বাসার দরজা না খোলায় ফিরে আসে। পরে ৯ ডিসেম্বর এনামুল তার নিজের ব্যবহৃত গামছা সঙ্গে নিয়ে যায়। মাগরিবের আজানের পর তারা গাওজিয়ানের ফ্ল্যাটের কলিংবেল চাপে। গাওজিয়ান ইশারায় জানতে চাইছিলেন যে কী বিষয়। তখন এনামুল ‘ওয়াটার ওয়াটার’ বলে বোঝাতে চায় যে তারা পানি খাবে। মুহূর্তের মধ্যেই তারা ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং এনামুল গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে। রউফ কোমরের দিকে জাপটে ধরে। অল্প সময়ের মধ্যেই গাওজিয়ানের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে গাওজিয়ান রউফের বাঁ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কামড়ে দেয়। তারা দু-তিন মিনিটের মধ্যেই গাওজিয়ানের মৃত্যু নিশ্চিত করে। বসার ঘরে টেবিলের ওপরে তাঁর ল্যাপটপ খোলাই ছিল এবং পাশে ছিল একটি ছোট ব্যাগ। রউফ ওই ব্যাগটি খুলে সেখানে থাকা তিনটি ১০০০ টাকার বান্ডিল, কিছু খুচরা টাকা ও মোবাইল নিয়ে নেয়। এরপর মৃতদেহ রেখে ছাদে চলে যায়। রাত ১১টার দিকে ভবন একটু সুনসান হলে রউফ পেছনে গিয়ে বালুমাটিতে কাঠের টুকরা দিয়ে গর্ত করে। এরপর নিজে একাই গাওজিয়ানের লাশ লিফটে করে নিচে এনে মাটিচাপা দেয়।

পুলিশ জানায়, হত্যায় অভিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে আব্দুর রউফ (২৬) এ কয়দিন পুলিশ ও সাংবাদিকদের নানা তথ্য দিয়ে সহায়তা করে। বাড়ির নিরাপত্তার ঘাটতিসহ কিছু বিষয়ে সন্দেহ থাকায় তাকেসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছিল পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে কিছুই জানে না—এমন ভাব দেখায় রউফ। নিহতের টাকা আত্মসাতের তথ্য মেলায় তখন তদন্তে ব্যাবসায়িক বিরোধকেই গুরুত্ব দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার রাতে বাড়িতে থেকেও অনেক বিষয়ে তথ্য না দেওয়ায় সন্দেহের আওতায় আসে রউফ। তদন্তে ধরা পড়ে রফের সন্দেহজনক যোগাযোগ। তবু জিজ্ঞাসাবাদে সে ছিল স্বাভাবিক। আটকের পর দেখা যায়, তার হাতে রয়েছে কামরের দাগ। পরে ডিবি পুলিশ গত মঙ্গলবার আব্দুর রউফ ও তার সহযোগী নিরাপত্তারক্ষী এনামুল হককে (২৭) গ্রেপ্তার করে। এরপর তারা অকপটে স্বীকার করতে থাকে হত্যার দায়। এভাবেই চীনা নাগরিক গাওজিয়ান হুই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ডিবি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ