1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন

চাকরি ও ভর্তিতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২২ Time View

মাদকাসক্ত চিহ্নিত করতে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রেও এ ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মাদকাসক্তের সংখ্যা কমবে বলে আশা করছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যমান আইনের আলোকে বিধিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদকাসক্তদের চিহ্নিত করতে ডোপ টেস্ট ব্যবস্থা চালুর বিধানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তা চালু না হওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে মাদকাসক্তরা আসীন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একাধিক বৈঠকে আলোচনা হয়। আলোচনায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদকাসক্তদের বাদ দিতে ডোপ টেস্ট ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশে এ সুপারিশ কার্যকর করা হয়েছে। চলতি বছরে দুটি নিয়োগ পরীক্ষায় ২৪ জনকে চিহ্নিত করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জাতীয় সংসদ ভবনে গত ১ ডিসেম্বর সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, কমিটির পঞ্চম বৈঠকের সুপারিশ অনুযায়ী ডোপ টেস্টকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে সর্বক্ষেত্রে কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে গত ১৭ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন সব দপ্তর ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ডোপ টেস্ট অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে প্রবেশের সময় বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে ডোপ টেস্ট অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সংসদীয় কমিটিকে পুলিশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশে বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের আবশ্যিকভাবে ডোপ টেস্ট করানো হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থী ডোপ টেস্টে মাদকাসক্ত মর্মে ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট হলে তাকে নিয়োগের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালের বহিরাগত ক্যাডেট এসআই (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত দুই হাজার প্রার্থীর ডোপ টেস্ট পরীক্ষায় তিনজনের পজিটিভ ধরা পড়ে।

এ ছাড়া চলতি বছরে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় ৯ হাজার ৬২৮ জনের ডোপ টেস্ট করানো হয়। যার মধ্যে ২১ জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। আরো জানানো হয়েছে, জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যাওয়ার আগে পুলিশ সদস্যদের মেডিক্যাল পরীক্ষার পাশাপাশি ডোপ টেস্ট করানো হয়। গত তিন বছরে এক হাজার ৭৬৩ জনের ডোপ টেস্ট করানো হয়েছে। এ ছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টসহ পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। চাকরিতে নিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্ট চালুর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই সব নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট চালু করেছে। সব প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্ট চালু হলে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, ১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা শেষে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করার আগে এবং চূড়ান্ত (ফাইনাল) পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্ট সিস্টেম চালু করার সুপারিশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ ও অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দেশকে মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে এবং একটি শিক্ষিত ও সুস্থ জাতি উপহার দিতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যমান আইনের আলোকে ডোপ টেস্ট বিধিমালার একটি খসড়া প্রণয়নের কাজ চলছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে ‘মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ ডোপ টেস্ট প্রবর্তন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরে ১০২ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি ওই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, ডোপ টেস্ট বিধিমালার খসড়া তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ডোপ টেস্টের জন্য উন্নত মানের ল্যাবরেটরি তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া সার্বিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে জনবল তৈরির প্রশিক্ষণ চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ