1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৫ অপরাহ্ন

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবীরাও ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতেন’

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২৪ Time View

‘জয় বাংলা’ শ্লোগানকে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেছেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে-বিদেশে সকল স্বাধীনতাকামী বাঙালির একটাই শ্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। শুধু বাঙালি নয়, কিছু পাকিস্তানি কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও তখন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়েছেন। এ কারণে তখন তাদের কারাবরণও করতে হয়।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ মন্তব্য করেন। আদালত এই রিট আবেদনের ওপর কাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় পরবর্তী শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।

আজ রিট আবেদনকারী ড. বশির আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু, মো. শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার রিট আবেদনকে সমর্থন করে শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. বশির আহমেদের করা এক রিট আবেদনে ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ, আইন ও শিক্ষা সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর এক আদেশে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান নিয়ে সরকারের বক্তব্য ও রাষ্ট্রীয় নীতি জানতে চান। এরই ধারাবাহিকতায় দুইবছর আগে জারি করা রুলের ওপর আজ শুনানি হয়।

শুনানিতে ড. বশির আহমেদ বলেন, বিশ্বের ১৬৩টি দেশে তাদের জাতীয় শ্লোগান আছে। তাই আমরা বাংলাদেশেও জয়বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান বা মোটো (মূলমন্ত্র) হিসেবে ঘোষণার নির্দেশনা চাচ্ছি।

এ সময় আদালত বলেন, এটা সরকারের নীতিনির্ধারণের বিষয়। এ জন্য জাতীয় সংসদকে আইন করতে হবে। আমরা জাতীয় সংসদকে আইন করার নির্দেশ দিতে পারি না। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় আছে।

ড. বশির আহমেদ বলেন, নির্দেশনা না দিতে পারলে আদালত অভিমত প্রকাশতো করতে পারেন। এ সময় আদালত রিট আবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চান। জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, আমরা এই রিট আবেদনকে সমর্থন করি।

তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে জাতীয় প্রতীক, জাতীয় সংগীত, রাষ্ট্রীয় ধর্মসহ বিভিন্ন জাতীয় বিষয় নিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু জাতীয় সংগীত নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই। যদিও সংবিধানের ১৫০(২) নম্বর অনুচ্ছেদে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ সন্নিবেশিত হয়েছে। সেখানে শেষ অংশে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান যুক্ত আছে। তাই আমাদেরও এ বিষয়টি সুনির্দিষ্ট হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, যদিও পাকিস্তানের আদলে আমাদের রেডিও স্টেশনের নাম দেওয়া হয়েছে রেডিও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ইত্যাদি। শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের শ্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। দেশে-বিদেশে স্বাধীনতাকামী সকল বাঙালির একটাই শ্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। শুধুই বাঙালি নয়, কিছু পাকিস্তানী কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও তখন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়েছেন। একারণে তখনকার ভুট্টো সরকার তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

এ সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম বলেন, সে সময় পাকিস্তানের ৪০ জন বুদ্ধিজীবীকে ধরে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত বলেন, তাদের যখন ধরে কারাগারে নেওয়া হচ্ছিল তখনও তারা জয়বাংলা শ্লোগান দিয়েছেন। আদালত বলেন, পাকিস্তানি সৈন্যরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। গুলি খেয়ে মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতো।

এর আগে ‘৭ মার্চ দিনটিকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা’ চেয়ে করা এক রিট আবেদনের ওপর শুনানিকালে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর আদালত বলেছিলেন, ভারতে একজন ব্যক্তির সঙ্গে আরেকজনের দেখা হলে তারা ‘জয় হিন্দ’ বলে সম্বোধন করেন। অথচ আমাদের এখানে সেটা নেই।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলা’ বলা হতো। কিন্তু এখন এটা (জয় বাংলা) বললে বলা হয় যে, ওটাতো একটি রাজনৈতিক দলের শ্লোগান। আদালতের এ মন্তব্যের ধারাবাহিকতায় ওইবছর ডিসেম্বরে ড. বশির আহমেদ এ রিট আবেদন করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ