1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

হুইপের ওপর হামলা: ৭ হাজার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৪ জুন, ২০১২
  • ৬৩ Time View

যশোরের ভবদহের বিল কপালিয়ায় জোয়ারাধার (টিআরএম) প্রকল্প নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মণিরামপুর থানা ও অভয়নগর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এতে ৭ সহস্রাধিক গ্রামবাসীকে আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে অভয়নগর ও মনিরামপুরের সংশ্লিষ্ট এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। রোববার দিনভর বিল কপালিয়া এলাকার বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার গ্রামবাসী লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

শনিবারের সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ওই দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করা হয়। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম টিআরএম প্রকল্প স্থগিতের খবর দিলেও কোনো সূত্র থেকে তা নিশ্চিত করা যায়নি।

রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল হক ও যশোরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মীর জহুরুল ইসলাম বিল কপালিয়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

শনিবার এই প্রকল্পের সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে কয়েক হাজার গ্রামবাসীর হামলার শিকার হন জাতীয় সংসদের হুইপ শেখ আবদুল ওহাব ও অভয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মালেকসহ অন্তত ২৬ জন।

এবিষয়ে মনিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) একেএম আজমল জানান, এসআই তৌহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৫/৬ হাজার গ্রামবাসীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, অনধিকার প্রবেশ, শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, অভয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) মোল্লা খবির আহমেদ জানান, থানার এসআই ফেরদৌস বাদী হয়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় গাড়ি পোড়ানো, পুলিশের ওপর হামলা ও সংঘর্ষসহ সরকারি কাজে বাধা দান ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।

রোববার দুপুরে ভবদহের বিল কপালিয়া এলাকা পরিদর্শনে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল হক। শনিবার সংঘর্ষের ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য রোববার সকালে তিনি যশোর আসেন। আর সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম।

এদিকে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম রোববার বিকেলে টিআরএম প্রকল্প স্থগিতের খবর প্রচার করেছে। তবে কেউই এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেননি।

টিআরএম প্রকল্প পরিচালক দীপক কুমার জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো খবর তার জানা নেই। যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনিও সংবাদ মাধ্যম থেকেই এটি জানতে পেরেছেন। তার কাছে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা বা তথ্য আসেনি।

এর আগে শনিবারের সংঘর্ষের সময় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ২ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করা হয়েছে। এরা হলেন- অভয়নগর থানার ওসি আহসান হাবীব এবং মনিরামপুর থানার ওসি ছয়রদ্দিন।

যশোরের পুলিশ সুপার কামরুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শনিবার রাতেই ওই দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে খুলনা পুলিশ রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেননি, এমন অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে শনিবারের সংঘর্ষের পর ভবদহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। রোববারও দিনভর গ্রামে গ্রামে হাজার হাজার নারী-পুরুষ লাঠিসোটা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। হুইপের লোকজনের হামলার আশঙ্কায় তারা এই মহড়া দিয়েছেন।

ভবদহ এলাকার পাঁচাকড়ি গ্রামের শওকত আলী জানান, টিআরএম হলে তাদের চাষবাস বন্ধ হয়ে যাবে। এ জন্য তারা এই প্রকল্প চান না বিধায় শনিবার বাধা দিয়েছেন। এখন হুইপের লোকদের হামলায় আশঙ্কায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

তবে ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ জানিয়েছেন, ভবদহ এলাকায় জোয়ারাধার (টিআরএম) প্রকল্পের কোনো বিকল্প নেই। টিআরএম না হলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় আবারও বিপর্যয় নেমে আসবে।

তিনি জানান, স্থানীয় ঘের মালিকরা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য গ্রামবাসীকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছেন। আর পাউবোর প্রতি অবিশ্বাস, ক্ষতিপূরণ পেতে বিলম্ব ইত্যাদি কারণ এই আন্দোলন দানা বাধঁতে সাহায্য করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, দমন পীড়ন নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে এ সঙ্কট নিরসন করে টিআরএম বাস্তবায়ন করতে হবে।

শনিবার সকালে উপজেলার ভবদহের বিল কপালিয়ায় জোয়ারাধার (টিআরএম) প্রকল্পের কাজ শুরু করতে এসে এলাকাবাসীর হামলার শিকার হন জাতীয় সংসদের হুইপ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্য শেখ আব্দুল ওহাব, অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকসহ অন্তত ২৬ জন।

হামলাকারীরা পাউবোর তিনটি জিপ, তিনটি মোটরসাইকেল ও তিনটি নসিমন ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা দুপুরে নওয়াপাড়ায় যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় যাত্রীবাহী কয়েকটি বাস ও একটি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ