1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ নৌশক্তি নিয়োজিত হবে এশিয়ায়

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩ জুন, ২০১২
  • ৮৩ Time View

ব্যাপকভিত্তিক কৌশলগত স্থানান্তরের অংশ হিসেবে খুব শিগগির যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ নৌশক্তি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিয়োজিত করা হবে।

গত শনিবার সিংগাপুরে অনুষ্ঠিত সাংগ্রি-লা কনফারেন্সে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিও প্যানেট্টা এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ যুদ্ধজাহাজ এশিয়া-প্রশান্তমহাসগারীয় অঞ্চলে ঘাঁটি গাড়বে।

এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি বাড়ানোর নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বার্ষিক সাংগ্রি-লা সম্মেলনে প্যানেট্ট আরো বলেন, ‘কোনো ভুল না করে একটি দৃঢ়, উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং টেকসই পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক বাহিনীতে ভারসাম্য আনছে এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ করছে।’

পরিকল্পনাটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্যানেট্ট। তবে প্রতিরক্ষা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট সমস্যা এবং বরাদ্দ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত এ পরিকল্পনায় কোনো সমস্যা করবে না উল্লেখ করে তিনি জানান, এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে পেন্টাগনের পাঁচ বছর মেয়াদি বাজেটের জন্য যথেষ্ট অর্থ রয়েছে।

এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়লে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের উত্তেজনা আরো বাড়তে পারে। যেখানে চীনা নেতারা বারবার বলে আসছেন, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বেশি বেশি উপস্থিতি তাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা বুঝার জন্য এশিয়া-প্যাসিফিকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।

এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এবং বিবাদপূর্ণ একটি এলাকা হচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগর। চীন পুরো এলাকার মালিকানা দাবি করে। কিন্তু তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, ব্রুনেই এবং ফিলিপাইনসও এখানে তাদের সীমানা দাবি করে থাকে। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে বেশিরভাগ প্রতিবেশী দেশের বিবাদ চলছে।

এ আঞ্চলিক বিবাদ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার জন্য চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু একই সঙ্গে এও পরিষ্কার করে বলছে যে, এ অঞ্চলে সামরিক জাহাজ চলাচলের স্বাধীনতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি ফিলিপাইনসের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা শুরু হলে ফিলিপাইনসের সঙ্গে সামরিক মহড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের আরেক বিবাদী রাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও সামরিক মহড়া দিয়েছে তারা।

তবে এসব নিয়ে চীনের কঠোর সমালোচনা করা থেকে কৌশলে বিরত থেকেছেন প্যানেট্ট। বরং দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিলে সামরিক হস্তক্ষেপের ব্যাপারে চীনকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া তাইওয়ান প্রণালীর এলাকায় তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।

চলতি বছরের শেষের দিকে চীন সফরে যাওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্যানেট্ট। তিনি চান চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ, মানবকি সহায়তাসহ সামরিক সম্পর্ক আরো গভীর হোক।

তবে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি বাড়ালে চীনের জন্য সরাসরি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে যে অনেকে মনে করেন সে কথা স্বীকার করেছেন প্যানেট্ট। কিন্তু তার অভিমত হলো, এশিয়া-প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিতে চীনই লাভবান হবে সেই সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়লে এসব অঞ্চলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়ার সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বাড়বে। এ অঞ্চলে ভারতমহাসগরসহ বিস্তৃত এলাকায় অনেক বন্দরে মহড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে তারা।
গত বছর এ অঞ্চলে ২৪টি দেশের সঙ্গে ১৭২টি সামরিক মহড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীতে বর্তমান যুদ্ধজাহাজের আনুমানিক অর্ধেক সংখ্যক জাহাজ বিভিন্ন উপকূলে মোতায়েন করা আছে। তবে সামনের কয়েক বছরের মধ্যে কিছু জাহাজ পরিত্যক্ত হওয়া এবং সেগুলোর স্থানে নতুন জাহাজ যোগ না হওয়ার কারণে মোট জাহাজের সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমান নৌবহরের মধ্যে ১১টি বিমানবাহী জাহাজ রয়েছে যার মধ্যে ছয়টি প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা আছে।

তবে এ বছর একটি বিমানবাহী জাহাজ অবসরে যাবে। ফলে ১০টির মধ্যে পাঁচটি সান দিয়েগো, ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্য এবং জাপানের প্যাসিফিক বন্দরে মোতায়েন থাকবে।

তবে প্যানেট্টা বলেছেন, আগামী বছরগুলোতে প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে ছয়টি বিমানবাহী জাহাজ রাখতে চান তিনি। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর বেশিরভাগ ক্রুজার, ডেস্ট্রয়ার, সাবমেরিন এবং উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে নয় দিনের সফরে বের হয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিও প্যানেট্টা। সফরে ভিয়েতনাম এবং ভারতেও বিরতি দেওয়ার কথা আছে তার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ