1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৩ অপরাহ্ন

দুর্নীতির ৭৩ কোটি টাকা ফেরত দিলেন ইফা ডিজি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২২ Time View

সরকারী বিশেষ নিরীক্ষায় ধরা খেয়ে দুই দফায় ৭৩ কোটি টাকা ফেরত দিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল। প্রথম দফায় গত ২৩ অক্টোবর সোনালী ব্যাংক পাবলিক সার্ভিস কমিশন শাখায় ১টি চেকের মাধ্যমে ৩২ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় গত ৩১ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের একই শাখায় ৩টি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৪১ কোটি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেন তিনি। এ নিয়ে তার ফেরত প্রদানকৃত টাকার পরিমাণ প্রায় সোয়া ৭৩ কোটি টাকা। জাতি ফিরে পেল তার হারিয়ে যাওয়া ৭৩ কোটি টাকা।

সম্প্রতি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি পরীক্ষার জন্য সরকার একটি বিশেষ নিরীক্ষা দল প্রেরণ করেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল অব বাংলাদেশ কার্যালয় থেকে এ নিরীক্ষা দল প্রেরণ করা হয়।

সিভিল অডিট বিভাগের এ নিরীক্ষা দল অন্যান্য অনিয়মের সাথে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কয়েকটি বড় ধরনের আর্থিক ঘাপলা খুজে পান। তারা কেবলমাত্র ৯/৭/১৯ থেকে ৮/৮/১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পের ডিপিপি, বরাদ্দ ও ব্যয়, ক্যাশবহি, লেজার বুক ও রেকর্ডপত্র যাচাই করে ৩১,৯৯,১৫,২২০/ টাকার একটি বড ধরনের অনিয়ম খুঁজে পান।

বিষযটি নিয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তার পক্ষ থেকে বলা হয় এ টাকা ৬৪ জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে খবর নিলে দেখা যায় সেখানে এ টাকা প্রেরণ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রতিনিধি দল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে গত ২৩ অক্টোবর মহাপরিচালক সামীম মোঃ আফজাল একদিনেই চেক নং ১৪৬০৭০৮ মারফত ৩১,৯৯,১৫,২২০/ টাকা ফেরত দেন। চেকের টাকা চালান নং টি-৩১ তারিখ ২৩ অক্টোবর, সোনালী ব্যাংক লিঃ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন শাখা, আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭ এ মারফত সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

এরপর একই ব্যাংকে আরো ৩টি চেকের মাধ্যমে চালান নং টি-৯৮, চালান নং টি-৯৯ এবং চালান নং টি-১০০ মারফত মোট ৪১,২৭,৩০,০৪৪ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়। যে তিনটি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৪১ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয় তা হলো চেক নং ১৪৬০৭৩১ মারফত ২৪,০৫,৫২,২২৫ টাকা, চেক নং ১৪৬০৭৩২ মারফত ৪,৫৫,০৪,৮১৯ টাকা এবং চেক নং ১৪৬০৭৩৩ মারফত ১২,৬৬,৭৩,০০০ টাকা। মোট ৪১,২৭,৩০,০৪৪ টাকা গত ৩১ অক্টোবর সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

এত টাকা ফেরত দেয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দলের সদস্যবৃন্দ। তারা বলেন সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দল না এলে এ অর্থ কখনোই পাওয়া যেতো না।

এ দিকে মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর রবিবার (৩ নভেম্বর) এক জরুরী সভায় মিলিত হন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগারগাঁও সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সকল পরিচালক এবং কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

তারা বলেন সামীম মো. আফজালের দুনীতি নজীরবিহীন। স্বজনপ্রীতিতে তিনি চ্যাম্পিয়ন এবং অর্থ আত্মসাতে বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছেন। নিয়োগ কমিটির সভাপতি থেকে নিজের আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। রাতের বেলায় নিজের রুমে খাতায় লিখিয়ে আত্মীয় স্বজনকে নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করিয়েছেন।

জাল সনদপত্রে চাকরী দিয়েছেন। কোটা না থাকায় নিজের ভাতিজা ও ভাগ্নিকে ভিন্ন জেলার বাসিন্দা দেখিয়ে চাকরী দিয়েছেন। বিভিন্ন নির্লজ্জ কর্মের মাধ্যমে নিজেকে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়াও বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন বেসরকারী ব্যাংকে টাকা এফডিআর করে কমিশন খাওয়া শুরু করেছেন।

ঢাকার ব্যাংক বাদ দিয়ে তিনি ফার্মার্স ব্যাংকের কুমিল্লা শাখায় সাড়ে ২৯ কোটি টাকা এফডিআর করে রাখেন। আর এখন তা ফেরত আনতে ব্যর্থ হলেন। তারা বলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভায় সদস্যবৃন্দ প্রকাশ্যে যে ব্যাক্তিকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করেন তিনি কিভাবে মহাপরিচালক পদে আসীন থকেন? বক্তারা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

২০০৯ সাল থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন সামীম মো. আফজাল। নিয়মিত চাকরী শেষে ২ দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ