1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

রংমহলে প্রভাবশালীরা আসতেন, গোপন ক্যামেরায় ধারণ হতো ছবি

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৩ Time View

একে একে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম প্রধান ওরফে ক্যাসিনো সেলিমের যত অপকর্মের তথ্য। তদন্তকারীরা বলছেন, এরই মধ্যে চারটি দেশে তাঁর হাজার কোটি টাকা সরানোর তথ্য পাওয়া গেছে। কোন পথে, কিভাবে এ অর্থ পাচার করা হয়েছে সেই তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তাঁরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গিয়ে বিয়ে করা এবং রংমহলের মাধ্যমে অনেকের সাথে সখ্য গড়ে তুলেছিলেন তিনি। র‍্যাবের তদন্তে এমনই সব তথ্য বেরিয়ে আসছে।

তদন্ত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে উত্তর কোরীয় নাগরিক দো-র সহায়তায় শুরু করা সেলিম প্রধানের অনলাইন জুয়ার মূল সার্ভার ফিলিপাইনের ম্যানিলায়। তিনি সেখান থেকে অনলাইন জুয়ার কপিরাইট কিনে ঢাকায় সার্ভার চালু করেন। নব্বইয়ের দশকে জাপানে গিয়ে বিয়ে করেন সেলিম। সেখানে গাড়ির ব্যবসা করতে গিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়। একপর্যায়ে জাপান থেকে ফিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানেও বিয়ে করেন সেলিম। পরে থাইল্যান্ডে বসতি গড়ে তোলেন। সেখানে হোটেল ও ক্যাসিনো ব্যবসা রয়েছে তাঁর। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গিয়াসউদ্দিন মামুনকে বিএমডাব্লিউ গাড়ি উপহার দিয়ে হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ঠ হন সেলিম।

সূত্র মতে, থাই এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজ থেকে সেলিমকে নামিয়ে আনার সময় তাঁর লাগেজ তল্লাশি করে পাওয়া যায় তিনটি মেমোরি কার্ড। সেখানে দেশি-বিদেশি তরুণীদের সঙ্গে অনেক ব্যক্তির অন্তরঙ্গ ছবি ছিল। এসব ছবি দেখিয়ে কোটি টাকা বা সুবিধা ভাগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সেলিমের। গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৯৯ নম্বর সড়কের ১১/১ মমতাজ ভিশন নামের বাড়ির দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়েছিলেন সেলিম। ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে (বাঙালি) নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। চতুর্থ তলায় ছিল তাঁর রংমহল। সেখানে তিনটি কক্ষ নাচ-গান ও বিশেষ ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনে ব্যবহার করা হতো। একটি বিশেষ কক্ষে ভেন্টিলেটরের ওপর ছোট্ট গোপন ক্যামেরা বসানো ছিল। সেলিমের সহযোগী মাসুম ওই গোপন ক্যামেরায় ছবি ধারণ করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম র‌্যাবকে বলেছেন, “ছবি ধারণের পর সেলিম প্রধান প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ‘প্রধান ক্লাবের’ সদস্য করে নিতেন। এরপর নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতেন।” বনানীতে সেলিমের স্পা সেন্টারের পাশের কক্ষে প্রমোদকেন্দ্র খুলেছিলেন তিনি। এরই মধ্যে সেলিমের গাড়িচালক সুলাইমানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। তিনি বলেছেন, গুলশানের বাসার চারতলার অফিসে একটি গোপন কক্ষ রয়েছে। সেখানে গত ছয় মাসে অন্তত ১০০ তরুণীকে গাড়িতে করে নিয়ে গেছেন তিনি।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সেলিম প্রধান তাঁর অবৈধ আয়ের বিপুল পরিমাণ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন। আরো কিভাবে অর্থ পাচার করেছেন, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ থেকে সেলিম প্রধানকে নামিয়ে আনে র‌্যাব। এরপর তাঁর গুলশান ও বনানীর বাসা এবং অফিসে অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সমপরিমাণ ২৩টি দেশের মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইনে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ