1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে: ড. সালেহউদ্দিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত : নৌপরিবহন উপদেষ্টা হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল ২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি : মাহফুজ আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যকে জাতীয় শক্তিতে পরিণত করতে হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সিঙ্গাপুরের পথে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে ডাকসুর মার্চ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না : সিইসি বিজয় দিবসে ৪০ মিনিট বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল চলাচল হাদিকে সিঙ্গাপুর নিতে ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স

সাময়িক স্বার্থের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি স্বার্থ বিসর্জন নয়

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯
  • ২৫ Time View

ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে বন্ধুত্ব ও সমন্বয়ের মাধ্যমে মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে তাজ প্যালেস হোটেলে ভারতীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘জনগণের স্বার্থে অবশ্যই আমাদের আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। আমরা স্বল্পমেয়াদি স্বার্থের জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে বিসর্জন দিতে পারি না।’

দক্ষিণ এশিয়াকে অবশ্যই সংযুক্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক অঞ্চল হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে তাঁর সরকারের বন্ধুত্বপূর্ণ নীতির কথাও উল্লেখ করেন।

দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগ ও সৌহার্দ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর চার দফা প্রস্তাব

প্রথমত, আমাদের সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সৌহার্দ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। যুগ যুগ ধরে বহুত্ববাদ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি। এর মাধ্যমে আমরা ধর্ম, জাতি ও ভাষাগতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বৈচিত্র্যের উদ্যাপন করতে পারে। এটি হচ্ছে মৌলিক বিষয়।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত প্রবৃদ্ধির সময় সমাজে যেন বৈষম্য আরো বেড়ে না যায় তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সম্পদ হতে হবে অন্তর্ভুক্তমূলক এবং তা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।

তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত সম্প্রদায় বা দেশ পিছনে পড়ে থাকবে না। আমাদের যুবকদের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে অন্যদের হাত ধরতে হবে।

সম্প্রদায় ও দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা হচ্ছে চাবিকাঠি। আমাদের ভ্রান্ত ধারণা থেকে ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবশ্যই বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ন্ত্রণ করব। আমাদের জনগণের স্বার্থে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক বাস্তবতার প্রশংসা করব। আমরা স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ বন্ধ করে দিতে পারি না।’

এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলে ভারত-বাংলাদেশ ব্যবসা ফোরামের বক্তব্যে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের ব্যাপারে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ (ছাড় না দেওয়া) নীতি তুলে ধরেন। সে সময় তিনি ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানান।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম আয়োজিত ভারতীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সিঙ্গাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হেং সি কিয়াট, অ্যাপোলো হসপিটালস এন্টারপ্রাইজের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সোবানা কামিনেনি, বুকিং ডটকমের চেয়ারম্যান জিলিয়ান টান্স, সিঙ্গাপুরের সিক্যুয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শৈলেন্দ্র সিং এবং সঞ্চালক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস সোয়াব।

আলোচনার শুরুতে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনিসহ আলোচকদের তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ। এ ভারসাম্য উৎসাহব্যঞ্জক। বিশ্বে এমনটি দেখা যায় না। এমনকি তিনি মন্ত্রিসভায়ও সমানসংখ্যক নারী ও পুরুষ রাখতে পারেননি।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশের এত সম্পদ নেই। এর পরও সাফল্যের নেপথ্যে কী?’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও বাংলাদেশের জমি উর্বর, জনগোষ্ঠীও বিশাল। এই দুইয়ের সমন্বয় করে বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করতে পারে ও পেরেছে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন যে উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে ও একসঙ্গে উন্নতি করতে হবে। এটিই এখন বাংলাদেশকে প্রেরণা জোগাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাছে জনগণই ছিল প্রথম। কারণ তিনি যখন দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তখন ৮২ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তিনি তাদের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি ভালো জীবন দিতে চেয়েছিলেন। তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলেন। তাঁর পররাষ্ট্রনীতির মূল বিষয় ছিল সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। কারণ তাঁর লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক বঞ্চনামুক্তি। আমরা তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করলেও তিনি কখনো ভাবেননি যে তাঁকে দল বা দেশ চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন হলরুমে দর্শক-শ্রোতা সারিতে ছিল নীরবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পরিবারের ১৮ সদস্যকে হত্যা করা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি ও আমার বোন ওই সময় বিদেশে ছিলাম। দুর্ভাগ্যজনক বলছি এ কারণে, যাঁরা স্বজন হারান তারাই এই কষ্ট বোঝেন।’

প্রধানমন্ত্রী জার্মানি থেকে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়ে ছয় বছর পর দেশে ফেরার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘সব ঝুঁকি নিয়ে আমি ভেবেছিলাম, আমি চেষ্টা করে দেখি। জানতাম, জনগণের সমর্থন আছে। দল হিসেবে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করি।’

শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বাংলাদেশ কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ আন্ত অঞ্চল সংযোগকারী কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে। কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সরকার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। সেখানে বাংলাদেশ, ভারত ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ