1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
খালেদা জিয়ার সম্মানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখল ব্রিটিশ হাইকমিশন তারেক রহমানের সঙ্গে নেপাল-ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ তারেক রহমানের কাছে ভারতের শোকবার্তা হস্তান্তর করেন জয়শঙ্কর খালেদা জিয়ার জানাজার কাতার ছাড়িয়ে গেছে মগবাজার-কারওয়ান বাজার-জাহাঙ্গীর গেইট ও মিরপুর বেগম জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে গেলে কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী সঙ্গে নেয়া যাবে না খালেদা জিয়ার জানাজা চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, সংসদ ভবন এলাকায় জনতার ঢল খালেদা জিয়ার জানাজা: আজ সকাল থেকে বন্ধ থাকবে বেশ কয়েকটি সড়ক ‘ফিরোজায়’ নেওয়া হয়েছে খালেদা জিয়ার মরদেহ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নির্বাচনী তফসিলে কোনো পরিবর্তন হবে না : ইসি মাছউদ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পেছাল

ঝরত আরো রক্ত!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৯
  • ২৬ Time View

দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ‘শিক্ষা’ হিসেবে অস্ত্র আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড সরকার। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, আইন পরিবর্তনে তিনি বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, আরো বেশি মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিল টারান্টের। কিন্তু এর আগেই সে পুলিশের হাতে আটক হয়।

এদিকে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নির্বিচারে ৪৯ মুসল্লিকে হত্যার অভিযোগে গতকাল শনিবার আদালতে তোলা হয় হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে। তবে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো টারান্টের মধ্যে কোনো অনুশোচনা ছিল না বরং বিজয়চিহ্ন দেখিয়েছে সে।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর গতকাল স্বীকার করেছে, হামলার ১০ মিনিটেরও কম সময় আগে তারা ই-মেইলযোগে টারান্টের ‘ইসলামবিদ্বেষী’ ইশতেহার পেয়েছিল। কিন্তু সেখানে হামলার বিষয়ে কোনো আভাস ছিল না।

৪৯ প্রাণহানিতে শোকের শহরে পরিণত হয়েছে ক্রাইস্টচার্চ। গতকাল সেখানকার সব আয়োজনই ছিল মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। কেউ কেউ ব্যস্ত ছিল কবর খোঁড়ার কাজে, কারো অপেক্ষা প্রিয়জনের মরদেহের জন্য। তদন্তের অংশ হিসেবে গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্বজনের কাছে লাশ হস্তান্তর করেনি ক্রাইস্টচার্চের পুলিশ।

গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ আল নূর ও লিনউড মসজিদে ‘ভিডিও গেমস স্টাইলে’ ৪৯ মুসল্লিকে হত্যা করে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত উগ্র বর্ণবাদী টারান্ট। এর মধ্যে মসজিদ আল নূরে নিহত হয় ৪১ জন। গতকাল পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে তিন বাংলাদেশিসহ ২৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিন বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭১ বছর বয়সী বৃদ্ধও আছে। এ ছাড়া ক্রাইস্টচার্চের হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ৩৯ জন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহতদের প্রায় সবাই বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া।

হামলা শুরুর ৩৬ মিনিট পর আটক হয় টারান্ট। হামলায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয় নারীসহ আরো তিনজনকে। পরে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হত্যার অভিযোগ এনে গতকাল সকালে হাতকড়া ও কয়েদির পোশাক পরিয়ে ক্রাইস্টচার্চের একটি আদালতে তোলা হয় টারান্টকে। তবে তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হবে। বলা হচ্ছে, হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হলে জীবনের বাকিটা সময় কারাগারেই কাটাতে হবে তাকে।

আর্মড পুলিশের কড়া পাহারার মধ্যে থাকা টারান্টকে আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হলে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী এক করে বিজয়চিহ্ন দেখান। বিশ্বজুড়ে শ্বেতাঙ্গরা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হিসেবে এ বিজয়চিহ্ন ব্যবহার করে। আদালতে টারান্ট জামিনের কোনো আবেদন করেনি। আগামী ৫ এপ্রিল তাকে আবার আদালতে তোলা হবে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন জানান, হামলাকারীর উদ্দেশ্য ছিল হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, ‘হামলাকারীর গাড়িতে আরো দুটি রাইফেল ছিল। ফলে এটা পরিষ্কার যে সে আরো মানুষকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’

নিউজিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়সী নাগরিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের লাইসেন্সের আবেদন জানাতে পারে। এ ছাড়া যত খুশি অস্ত্র কিনতে পারে লাইসেন্সধারী ব্যক্তি। টারান্ট অস্ত্রের লাইসেন্স পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে। এরপর সে পাঁচটি সেমি অটোমেটিক রাইফেল কেনে। গোয়েন্দাদের ধারণা, কেনার পর বিভিন্ন যন্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাইফেলগুলোকে টারান্ট আরো প্রাণঘাতী করে তোলে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, নিউজিল্যান্ডের মানুষ এখন অস্ত্র আইনের সংশোধন চাইবে। আমি সংশোধনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।’

আইন সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিলেও নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর পরও টারান্টের ওপর নজরদারি না থাকাটা অস্বাভাবিক।

নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা বাহিনী জানিয়েছে, তারা এখন মূলত দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে। প্রথমত, কেন এবং কিভাবে এ হত্যাযজ্ঞ ঘটল? দ্বিতীয়ত, উগ্রবাদী মতাদর্শ ছড়ানোর পরও টারান্টের বিষয়টি কেন তাদের নজরে এলো না?

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর গতকাল জানিয়েছে, টারান্টের ৭৩ পৃষ্ঠার ইশতেহার তারা হামলার মিনিট ১০ আগে পেয়েছিল। মেইল পরীক্ষা করে দেখা যায়, মোট ৭০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে সেটি পাঠিয়েছিল টারান্ট। এদের মধ্যে জাতীয় নেতা সিমন ব্রিজেস এবং স্পিকার ট্রেভর ম্যালার্ড থেকে শুরু করে গণমাধ্যমও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘একটি মেইল এলে সেটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যায়। আর এ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হতে ন্যূনতম সময়ের প্রয়োজন। এ ছাড়া ওই মেইলে হামলার কোনো আভাসও ছিল না।’

এদিকে ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। যদিও হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সহমর্মিতা আর সাহায্যের হাত নিয়ে ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয়রা। ৪৯ মুসলমানের মৃত্যু যে কিউই জনগোষ্ঠী মেনে নেয়নি, তা স্পষ্ট। গতকাল ক্রাইস্টচার্চে প্রতীকী এক বেদিতে ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় হাজারো স্থানীয় বাসিন্দা। ফুলের তোড়ার সঙ্গে হাতে লেখা চিঠিও দিয়েছে অনেকে। একটি চিঠিতে স্থানীয় এক গাড়িচালক লিখেছে, ‘ক্রাইস্টচার্চ এখন শোকের শহর।’ আরেকজন লিখেছে, ‘আমি খুবই দুঃখিত যে তোমাদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি।’

স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ও অবশ্য নিউজিল্যান্ডের মানুষের ওপর আস্থা রাখতে চায়। লিনউড মসজিদের মিসরীয় বংশোদ্ভূত ইমাম ইব্রাহিম আবদেল বলেন, ‘আমরা এখনো নিউজিল্যান্ডকে ভালোবাসি। কোনো উগ্রবাদী শক্তি আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আঘাত করতে পারবে না।’ সূত্র : নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড, এএফপি, বিবিসি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ