1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

জিহাদি বধূ শামীমাকে নিয়ে নেদারল্যান্ডস ফিরতে চান স্বামী রিদাইক

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯
  • ৪২ Time View

জিহাদের জন্য চার বছর আগে দুই সঙ্গীসহ আইএসে যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি দেয়া শামিমা বেগমকে নিয়ে নেদারল্যান্ডসে ফিরে যেতে চান তার স্বামী ইয়াগো রিদাইক। ২০১৫ সালে শামিমা সিরিয়ায় আইএসের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিয়ে হয়। তখন শামিমার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াগো এসব কথা জানান। কয়েকদিন আগে শামিমাও নিজ দেশে ফেরার জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন।

শামিমার স্বামী বলেন, তিনি আইএসের সঙ্গে যুদ্ধ করতে নিজ দেশ ছাড়লেও এখন স্ত্রী ও নবজাতককে নিয়ে দেশে ফিরতে চান। ২৭ বছর বয়সী ইয়াগো বর্তমানে সিরিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর হাতে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে আটক আছেন। নিজ দেশে ফিরে গেলে সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দেয়ার অপরাধে ছয় বছরের কারাদণ্ড হতে পারে ইয়াগো রিদাইকের।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক প্রতিবেদক কুয়েনটিন সামারভিলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াগো বলেন, তিনি ভুল বুঝতে পেরে আইএসকে পরিত্যাগ করেছেন। এখন এ দলটি ছেড়ে আসার চেষ্টা করেছেন তিনি। এ কারণে জঙ্গিরা তাকে ডাচ্‌ গোয়েন্দা দাবি করে রাকায় কারাবন্দী করে নির্যাতন করছে।

৩৯ হাজার লোকের সঙ্গে ইয়াগো, শামিমা ও তাদের নবজাতক জারাহ সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আল-হাওয়াল শরণার্থীশিবিরে এক গ্রুপ সিরিয়ান যোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তবে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শামিমা এখন অন্য কোথাও পালিয়ে গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এদিকে শামিমার পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আখুঞ্জির বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ান গত শুক্রবার এক খবরে বলেছে, জঙ্গিদের কাছ থেকে হত্যার হুমকির পর নিজের ও নবাগত সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে সন্তানকে নিয়ে পালিয়েছেন শামিমা। শুক্রবার ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড সানের খবরে বলা হয়, নিজের দুর্দশার কথা প্রকাশ করায় জঙ্গিরা শামিমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশি বংশোদভূত শামিমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার চিঠি দিয়েছে ব্রিটেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্য আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন শামিমা বেগম। তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। আর তার সঙ্গে ছিলেন তার বান্ধবী আমিরা আব্বাস। তারও বয়স ছিল তখন ১৫ বছর।

চার বছর আগে লন্ডনছাড়া শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেছে যুক্তরাজ্য। শামীমার মা বাবা, বাংলাদেশী নাগরিক, সেই সূত্রে শামীমাও বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করেছিল যুক্তরাজ্য। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই দাবি অগ্রাহ্য করে বলেছে, শামীমা বাংলাদেশী নাগরিক না হওয়ায় তাকে বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না।

শামীমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার যুক্তরাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালানো হবে বলে ফেব্রুয়ারিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদকে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এক চিঠিতে তারা বলেছেন, পরিবারের সদস্যরা শামীমাকে ‘ত্যাজ্য করতে পারে না’। পরিবারের সদস্যরা শামীমার সন্তানকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতাও চেয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে ইয়াগো বলেন, ১৫ বছর বয়সী শামিমাকে যখন তিনি বিয়ে করেন, তখন তার বয়স ছিল ২৩ বছর। আর এ বিয়েতে ভুল কিছু ছিল না বলে তিনি মনে করেন। কারণ, নিজের পছন্দেই তিনি এ বিয়ে করেন। কীভাবে রাকায় শামীমার সঙ্গে দেখা হয় সে বর্ণনা দেন তিনি।

পূর্ব লন্ডনের স্কুল শিক্ষার্থী শামীমার সঙ্গে রাকার একটি নারীশিবিরে দেখা হওয়ার বিষয়েও রিদাইক বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেন। জানান, প্রথম দিকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীকে বিয়ে করায় তার আপত্তির কথাও।

“সত্যি কথা বলতে, যখন আমার এক বন্ধু আমাকে জানায়, একটি মেয়ে আছে যে বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহী, আমি তার বয়সের কথা ভেবেই তাতে আগ্রহ দেখাইনি, যদিও পরে আমি ওই প্রস্তাব মেনে নিই,” বলেছেন তিনি।

বিয়ের সময় শামীমার ‘মানসিক অবস্থা উপযুক্ত’ ছিল বলেও জানান এ আইএসযোদ্ধা। “তার পছন্দেই এটা হয়েছিল। সে একজন জীবনসঙ্গী খুঁজছিল এবং আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তার বয়স কম ছিল, ভালো হত যদি সে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করত। যদিও সে তা করেনি। সে বিয়ে করতে চেয়েছিল, তাই আমি তাকে বেছে নিয়েছিলাম,” বলে জানান রিদাইক।

আর তাছাড়া খাদিজা সুলতানা নামের ১৬ বছর বয়সী আরেক বান্ধবীও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা তিনজনই লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির শিক্ষার্থী ছিলেন।

তারা তিনজন যুক্তরাজ্যের গেটওয়ে বিমানবন্দর থেকে প্রথমে তুরস্কে পৌঁছান। তুরস্কে পৌঁছানোর পর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সিরিয়ায় যান। সিরিয়ার শহর রাক্কায় কিছুদিন অবস্থানের পরে ডাচ নাগরিক ইয়াগো রিদাইকের সঙ্গে শামিমার বিয়ে হয়। তিনি অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ