1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ৩৫ Time View

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। তবে ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে যারা থাকবেন তাদের ভোট নেবেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা।

৩৯টি নিবন্ধিত দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে এই নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ঢাকা -১০ ও ১২ আসন থেকে বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইলিয়াস সরকার জানান, ঢাকা-১২ আসনের রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ও ঢাকা-১০ আসনের ঢাকা কলেজ কেন্দ্রে ভোটাররা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছে। তারা ভোট দিতে শুরু করেছেন।

ঢাকা-৮ আসনের আরামবাগ হাই স্কুল কেন্দ্র থেকে বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মাহফুজুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এখানে মোট ভোটার ১ হাজার ৯৭৬।

ঢাকা-৭ আসনের রাজার দেউড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইয়াসির আরাফাত রিপন জানান, সেখানে ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে। নারীদের তুলনায় এই ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা বেশি। সেখানে ভোট দিতে যাওয়ার আগে ভোটারের কাছে মোবাইল ফোন থাকলে তা জমা নেওয়া হচ্ছে। ভোট দেওয়ার পরে আবার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা-৮ আসনের সেগুনবাগিচা হাই স্কুল কেন্দ্র থেকে বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন জানান, এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ৩ হাজার ৭৭০ জন। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার খান হুমায়ুন কবির বলেন, এখানে সকাল থেকেই নারী-পুরুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সকাল ৮টা থেকেই ভোটগ্রহণ শুরুর কথা বলেছি। হয়তো একটু দেরি হয়েছে।

ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে মহানগর এলাকার ভোটারদের ইসির ওয়েবসাইট এবং ১০৫ নম্বরে মেসেজ করে ভোটার নম্বর ও কেন্দ্রের নাম জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় সেই আসনে নির্বাচন স্থগিত করে আগামী ২৭ জানুয়ারি ভোটের পুনঃতফসিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য একাদশ জাতীয় সংসদে একসঙ্গে ২৯৯ আসনের ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গঠন হবে। যে দল বা জোট ১৫১ আসন পাবে, তারাই সরকার গঠন করবে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট খালেদা জিয়ার ‍মুক্তি না হলে নির্বাচনে যাবে না বললেও গণফোরাম সভাপতি ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ছায়ায় এসে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন অনিবন্ধিত দলের নেতারাও বিভিন্ন নিবন্ধিত দলের প্রতীকে অংশ নিয়েছেন।

কমপক্ষে তিন বছর কোনো নিবন্ধিত দলের যে কোনো কমিটিতে থাকার বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত বিধান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ থেকে ‍২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে তুলে দেওয়ায় দলছুট এবং নিবন্ধনহীনরাও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। সে সুযোগে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২২ প্রার্থী, মাহমুদুর রহমান মান্না, গোলাম মাওলা রনিরা প্রার্থী হয়েছেন।

এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থীর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৭৩৩ জন আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ১২৮ জন।

নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মিলিয়ে নৌকা মার্কায় ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর বিপরীতে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি ও শরিকদের প্রার্থী রয়েছেন ২৮২ জন। আর সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের। এই দলটি ২৯৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সব ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে বলেছেন। একইসঙ্গে দায়িত্ব পালনে কারো শিথিলতার কারণে সহিংসতা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন।

জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে সিইসি প্রথমে ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। বিভিন্ন দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ১২ নভেম্বর এ নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা করেন তিনি। এ হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ছিল ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ছিল ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটগ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর।

সংসদ নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি ভোটকক্ষে ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন।

ভোটের মাঠে ৮ লাখ ফোর্স
ভোটের দিন পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার, ব্যাটেলিয়ন আনসার, গ্রাম পুলিশ নিয়ে কেন্দ্র প্রতি গড়ে ১৫ জন করে মোট ৬ লাখ ২ হাজারের মতো সদস্য থাকছে। এছাড়া সশ্রস্ত্র বাহিনীর প্রায় ১ লাখ ২০ হাজারের মতো ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য আছে ৪০ হাজারের মতো। এছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের ভ্রাম্যমাণ টিম এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রায় ৫০ হাজারের মতো সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।

ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ভোটগ্রহণের আগে দুইদিন ও পরে দুইদিন মোট পাঁচদিনের জন্য মাঠে থাকবে। গ্রামপুলিশ ভোটের আগে-পরে চারদিন, অঙ্গীভূত আনসার ছয়দিন, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ২৬ ডিসেম্বর থেকে এবং বিজিবি ১ জানুয়ারি পর‌্যন্ত মোতায়েন থাকবে। আর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ডিসেম্বর থেকে মোতায়েন রয়েছেন। তারা থাকবেন ২ জানুয়ারি পর‌্যন্ত।

নির্বাচনে নিয়োগ করা হয়েছে ৪ হাজার ২১ জন ম্যাজিস্ট্রেট। এদের মধ্যে নির্বাচন তদন্ত কমিটিতে ২৪৪ জন এবং নির্বাচনী অপরাধে বিচারকাজ পরিচালনায় ৬৪০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্যদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত করা হয়েছে ৩ হাজার ১৩৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এদের মধ্যে প্রতি আসনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি টিমের সঙ্গে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। প্রতি আসনে সশস্ত্র বাহিনীর চারটি টিম মোতায়েন আছে। এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১ হাজার ১শ’ ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সঙ্গেই আছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তারা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় কাজ করবে। অবশিষ্ট ২ হাজার ২শ’র মতো ম্যাজিস্ট্রেট আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৭শ’ কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে ৩শ’ কোটি টাকা নির্বাচন পরিচালনার জন্য এবং ৪শ’ কোটি টাকা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে।

গত নির্বাচনে বিভিন্ন বাহিনীর ছয় লাখের মতো ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার তা ৮ লাখে পৌঁছেছে। আর প্রিজাইডিং অফিসার ৪০ হাজার ১৮৩ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২ জন এবং পোলিং অফিসার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন।

যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
যন্ত্রচালিত যান, হেলিকপ্টারসহ বিভিন্ন যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দিনগত মধ্যরাত (রাত ১২টা) পর্যন্ত বেবি টেক্সি/অটোরিকশা/ইজিবাইক, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পোসহ স্থানীয় যন্ত্রচালিত যানবাহন ও নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

তবে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে সীমিত আকারে কিছু যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দূতাবাসে কর্মরত দেশি-বিদেশি বিমানযাত্রী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের এয়ারপোর্টে চলাচলের যানবাহন প্রভৃতি নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।

দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক
এবারের নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পাঁচ হাজারের ওপরে সাংবাদিক মাঠে থাকছেন বলে জানিয়েছেন ইসির নির্বাচন জনসংযোগ শাখার পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান। এছাড়া দেশি ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ২৫ হাজার ৯শ’ পর‌্যবেক্ষক ভোট পর‌্যবেক্ষণ করবেন। আর ফেম্বোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত ও অন্য বিদেশি পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক/বিদেশি মিশনের কর্মকর্তা ৬৪ জন এবং বাংলাদেশস্থ দূতাবাস/হাইকমিশন বা বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি ৬১ জন পর‌্যবেক্ষণ করবেন।

ইভিএমের মাধ্যমে ৬ আসনে ভোট
প্রথমবারের মতো ছয়টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সম্পূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। প্রায় ৩ হাজার ৩শ’ সেনা সদস্য ইভিএম পরিচালনায় নিয়োজিত করা হয়েছে। ইভিএমের আসনগুলো হচ্ছে ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২ ও চট্টগ্রাম-৯।

ওয়েবসাইট ও মেসেজে ভোটার নম্বর
এবার মহানগরের ভোটারদের জন্য মোবাইলে মেসেজ দিয়ে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্র জানার ব্যবস্থা করেছে ইসি। এক্ষেত্রে যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস অপশনে গিয়ে PC লিখে একটা স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখে ১০৫ নম্বরে পাঠাতে হবে।

এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বরের স্থানে স্মার্টকার্ডের ১০ ডিজিট বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর লিখতে হবে। কারো এনআইডিতে ১৩ ডিজিট থাকলে এসএমএস করার সময় ওই এনআইডি নম্বরের আগে তার জন্মসাল যোগ করে ১৭ ডিজিট লিখতে হবে।

যেমন- PC xxxxxxxxxx/xxxxxxxxxxxxxxxxx লিখে সেন্ড করতে হবে ১০৫ নম্বরে।

এছাড়া নির্বাচন কমিশনের (http://www.ecs.gov.bd) ওয়েবসাইট থেকেও ভোটকেন্দ্রের তথ্য লিংকে ক্লিক করেও পাওয়া যাবে কার কেন্দ্র কোথায় এবং ভোটার নম্বর কত। আবার ১০৫ নম্বরে কল করেও জানা যাবে কার ভোটার নম্বর ও কেন্দ্র কোনটা।

বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল। সে নির্বাচনে ৫ কোটির বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগই পায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ