1. editor@priyodesh.com : editor : Mohammad Moniruzzaman Khan
  2. monirktc@yahoo.com : স্টাফ রিপোর্টার :
  3. priyodesh@priyodesh.com : priyodesh :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৪ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগের আরও ৫ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন : প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ২৯ Time View

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন নির্বাচনে তার দলের পক্ষে ভোট চেয়ে বলেছেন, দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাকে যাতে কেউ ব্যাহত করতে না পারে সেজন্যই আওয়ামী লীগের আরো অন্তত ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আরও ৫টি বছর সরকারে থাকা আমাদের একান্তভাবে প্রয়োজন। তখন বাংলাদেশে হতদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। প্রত্যেকটি মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা- যেটুকু বাকি আছে সেটাও আমরা করতে সক্ষম হব।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালি জাতির কাছে, বাংলাদেশের জনগণের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। এই কারণেই যাতে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ যেন কেড়ে নিতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দারিদ্র্যের হার বাংলাদেশে ২১ ভাগে নেমে এসেছে। ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার যদি আগামী ৫ বছর আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারি তাহলে এই দারিদ্রের হার আমরা অন্তত আরো ৫ থেকে ৬ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা এ সময় ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী দারিদ্র মুক্ত দেশে সকলে মিলে উদযাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করে কারো নাম উচ্চারণ না করে বলেন, ‘সত্য, আদর্শ ও নীতি বিবর্জিতরা দেশের জন্য কখনও মঙ্গল বয়ে আসতে পারে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলবো যে নৌকা মার্কায় ভোট চাই, সেবা করে দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’

‘আমার বিশ্বাস আছে, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে, যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিশিষ্ট লেখক এবং বুদ্ধিজীবী মুনতাসির মামুন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় বক্তৃতা করেন।

দলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নারী বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজীত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া এবং দলের ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তরের নেতৃবৃন্দও সভায় অংশগ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে মানুষ বিজয় দিবসে মনখুলে বিজয় উল্লাস করতে পারছে। বিজয় দিবসটা তারা উদযাপন করতে পারছে। একটা সময় ছিল এটা উদযাপন করাই যেত না। ইতিহাস বলা যেত না, বিকৃত ইতিহাস বলা হত, কিন্তু এখন আর সেই অবস্থাটা নেই। অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং এই ধারাবাহিকতাটাই বজায় থাকতে হবে তাহলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আর কেউ বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারবে না।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে, বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুল করে না। আর তাদের ভোটের সাংবিধানিক অধিকার আর কখনও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সেই সাহসও পাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কা জনগণের মার্কা। এই নৌকা মার্কা দিয়ে এদেশে স্বাধীনতা এসেছে। এই নৌকা মার্কা দিয়েই আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি। এই নৌকা মার্কার ফলেই আজকে বাংলাদেশের এই উন্নয়ন। উন্নয়নের গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে আজকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে।

তিনি বলেন, এই নৌকা মার্কা ছিল বলেই আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েশন হয়েছে। আজকে আমরা মহাকাশ জয় করেছি, স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করছি। পাশাপাশি বিশাল সমুদ্রসীমা যেমন অর্জন করেছি, আমাদের ল্যান্ড বাউন্ডারি অর্জন করেছি।

ঐক্যফ্রন্ট সরকারের সরকার প্রধান কে হবে সে বিষয়ে দেশবাসীকে তারা অন্ধকারে রেখেছে এবং এ বিষয়ে তাদের দূরভিসন্ধি থাকারও ইঙ্গিত দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে তারা নাকি সরকার গঠন করবে, তাহলে সরকারের প্রধান কে হবে সেটা কিন্তু আজ পর্যন্ত জাতির সামনে দেখাতে পারে নাই।’

‘একটা প্রশ্ন রেখে যাই তাদের সরকার প্রধান কে হবে, এতিমের অর্থ আত্মস্যাৎকারী- সে হবে না, নাকি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানকে হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামী- সে হবে, নাকি ঐ রাজকারবাহিনী বা যুদ্ধাপরাধে যাদের সাজা দিয়েছি তাদের কেউ হবে- সেটাতো স্পষ্ট করে তারা জানায় নাই। সেটাতো দেশবাসী জানে না’ বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীকেও সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বেছে নিতে হবে যে তারা কাকে চায়। তারা কি ধরনের সরকার চায়। দেশের এবং দেশের জনগণের ওপরই আমি সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিলাম। ‘স্বাধীনতাবিরোধী, খুনী, রাজকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, দুর্নীতিবাজ, ঐ অস্ত্র চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত খুনের আসামী এরা কখনও এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেবে না,’ যোগ করেন তিনি।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনে নেমেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের আদর্শহীনতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, তারা কিসের লোভে দুর্নীতিবাজদের সাথে হাত মিলিয়েছেন? তারা জনগণের কাছে কিভাবে আবার ভোট চাইতে যাবেন?

তিনি আবারও প্রশ্ন তোলেন, অপরাধীদের উদ্ধার করতেই কি নেমেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা?

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে কোন পরিবর্তনের কথা বলছেন তারা। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দিয়ে পরিবর্তন ! তিনি বলেন, দেশের ভালো চাওয়া এবং দেশের মানুষের ভালো থাকা যদি স্বেচ্ছাচারিতা হয় তাহলে তারা কী চান? তারা যে পরিবর্তনের কথা বলছেন তাহলে তারা ক্ষমতায় গেলে আবার লুটপাট, আবার অগ্নিসংযোগ, আবার মানিলন্ডারিং, আবার দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান, আবার ৫০০ জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ, আবার গ্রেনেড হামলা, আবার বাংলা ভাই সৃষ্টি, আবার এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা- সেই পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনবেন?’ ‘লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের বিজয় এলেও, পঁচাত্তরের পর সেই স্বর্ণালী ইতিহাস মুছে ফেলে নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে তৎকালীন অপশক্তি পরিচালিত সরকার। স্বাধীনতার সুফল একে একে নস্যাৎ করতে চেয়েছিলো তারা,’ বলেন তিনি।

২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকারের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ এ ক্ষমতায় তারা জনগণের ভোটে আসেনি। তাই জবাবদিহিতাও ছিলো না জনগণের কাছে। সেজন্য খুন-হত্যা-লুট ও সন্ত্রাস করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলো এবং তারা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রায় দেড় কোটি ভুয়া ভোটারও সৃষ্টি করেছিল। ‘একাত্তরে ছিলো খান সেনাদের অত্যাচার আর ২০০১ এ বিএনপির অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে দেশের মানুষ। দুর্নীতি-হত্যা-খুন নিয়েই রাজনীতি করেছে বিএনপি। তাদের ভোটে জেতার মতো আত্মবিশ্বাসও ছিলো না,’ যোগ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের কপালে যে দুর্নীতিগ্রস্তের তকমা ছিলো- আমাদের ১০ বছরের শাসনামলে তা দূর হয়েছে। মানুষের জীবনমানে আজ পরিবর্তন হয়েছে। তারা আজ আশাবাদী হতে পারে, আস্থার ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। ‘সাধারণ মানুষ আর তৃণমূলের উন্নয়নই ছিলো আমাদের মূল লক্ষ্য। হাওয়া ভবনের মতো কোনো দুর্নীতির কারখানা আওয়ামী লীগ করেনি’।

বিরোধী দল আমাদের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চেয়েও পারেনি। কেননা, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মানুষ নৌকাকে বেছে নিয়েছিলো দেশের অগ্রগতির জন্য। আজ দেশের সত্যিকারের পরিবর্তন হয়েছে। দেশের সব ক্ষেত্রেই আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মানুষের যে সত্যিকারের উন্নয়ন, তা তো আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্যই হলো- দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া।
খবর বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২৫ প্রিয়দেশ