ক্রিকেটারদের বিশ্বাসের ভিত কোথায়?

ক্রিকেটারদের বিশ্বাসের ভিত কোথায়?

বাংলাদেশ দলে কে খেলছে আর কে খেলছে না, এতে কিছু যায় আসে না। কয়েকদিন ধরে এই আলোচনা জোরেসোরে হচ্ছে। একধরনের হতাশা থেকেই মানুষ কথাগুলো বলছেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। গত তিন ম্যাচের প্রতিটি ইনিংসে ৫০ রানের মধ্যে শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলায় ভরসার জায়গাটা নড়বড়ে হয়ে গেছে।

ভজঘট পাকিয়ে ফেলা বাংলাদেশ দলের সেরা একাদশটাও মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না শেষ ওয়ানডেতে। গা গরম করতে গিয়ে ডান পায়ের কুঁচকির পেশিতে টান পড়েছে ইমরুল কায়েসের। বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী যা বলেছেন, সত্যি সত্যি তা হলে প্রথম টেস্টেও ইমরুলের খেলার ব্যাপারে সংশয় আছে। অথচ চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ইমরুলের জন্যও পয়মন্ত। বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার তিনি।

ইমরুলের পরিবর্তে নাঈম ইসলাম বা অলক কাপালির খেলা অনেকটাই নিশ্চিত। অর্থ হলো ব্যাটিং অর্ডারটা আবারো ওলটপালট হচ্ছে। এই দু’জনই মিডলঅর্ডারে ব্যাট করেন। ব্যাটিংয়ের তিননম্বরে নিয়মিত একজনকেও পাওয়া যাচ্ছে না। হয় অলক-নাঈমের একজন, নয়তো মুশফিকুর রহিমকে ওপরে খেলতে হবে।

শাহরিয়ারের অবশ্য ব্যাটিং উদ্বোধন করতে সমস্যা হবে না। একসময় জাতীয় দলের নিয়মিত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি,“আমাকে যেখানেই দেওয়া হোক ভালো করতে চেষ্টা করবো। আগের ম্যাচে দুঃখজনক ভাবে আউট হয়েছি। একই ভুল বারবার করলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য। আমি চেষ্টা করবো ভালো করতে। আমাদের মধ্যে একটা বিশ্বাস আছে চট্টগ্রামের এই মাঠে হারবো না।”

তামিম ইকবাল ওয়ানডে সিরিজে ব্যাটপ্যাচে থাকায় মূলত টপঅর্ডার থেকে রান আসছে না। তামিমের ভালো খেলাটা যে কতটা জরুরী তা ভাষায় প্রকাশের নয়,“চেষ্টা তো করছি। দেখা যাক কি হয়।” অনেক চেষ্টা করছেন তামিম। সবার আগে এসে নেটে ঢুকছেন। একাগ্রতা দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটেবলের প্র্যাকটিসও করেছেন। তারপরেও না হলে দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ দলের, দুর্ভাগ্য তামিমেরও।

শেষ দুই সিরিজে জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হারলেও বাংলাদেশকে ধবলধোলাই দেওয়া সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বোধহয় হচ্ছে না। যদিও দলের নিয়মিত পারফরমার হয়ে উঠা নাসির হোসেনও বিশ্বাস করেন শেষ ম্যাচটা তারা জিতেবেন,“এখানে আমরা জিতবো। কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক আমি এটা বিশ্বাস করি।”

সহ-অধিনাক মাহমুদউল্লাহ আশাবাদি তবে অনেকগুলো কিন্তু জুড়ে দিয়ে,“চট্টগ্রামে আমাদের অনেক সুখস্মৃতি আছে। আমরা যদি সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি। মাঠে নিজেদের প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে জেতা সম্ভব।”

পেসার রুবেল হোসেন চোখ বন্ধ করে জানিয়ে দিলেন,“আমরা জিতবো। মন থেকে বলছি জিতবো।” এই বিশ্বাসের মজবুত কোন ভীত নেই। আগের কয়েকটি ম্যাচের ফলাফলই তাদেরকে প্রেরণা যোগাচ্ছে। তাহলে তো নাজমুল হোসেনকে খেলাতে হবে। ভাগ্যময় ভেন্যুর সৌভাগ্যবান ক্রিকেটার জাতীয় দলের এই পেসার। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সর্বশেষ সাত ম্যাচের যে পাঁচটিতে জয় আছে বাংলাদেশ দলের। সবগুলোতেই খেলেছেন নাজমুল।

সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও জানালেন,“হয়ে যাবে, চিন্তা করবেন না।” সাকিব গত দুই ম্যাচে নাসির হোসেনকে নিয়ে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু একটা দূরত্বে যাওয়ার পর থেকে গেছেন ভুল শট খেলে।

শেষপর্যন্ত সিরিজের সমপনী ম্যাচে বাংলাদেশ জিতে গেলে তা হবে অবিশ্বাস্য এক অর্জন। খেলোয়াড়রা যে সংস্কার মানেন তা অমূলক বলে গন্য হবে না।

খেলাধূলা শীর্ষ খবর